গৃহবধূ খুন মামলায় আইনজীবী স্বামীসহ চারজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
বনগাঁ: গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন আইনজীবী রথীন্দ্রনাথ সেনসহ তাঁর পরিবার। শুক্রবার সন্ধ্যায় বনগাঁ মহাকুমা ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক কল্লোল দাস একই পরিবারের চার সদস্য—রথীন্দ্রনাথ সেন, তাঁর বাবা রবীন্দ্রনাথ সেন, মা সুপ্তা সেন ও ভাই রজত সেনকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বনগাঁ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পাওয়ারহাউস সংলগ্ন এলাকায় পরিবারসহ থাকতেন রথীন। অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী ইতু সেন ওরফে প্রিয়াকে নিষ্ঠুর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতেন। ২০২২ সালের ৮ই এপ্রিল গুরুতর মারধর করে অচৈতন্য অবস্থায় স্ত্রীকে হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে যান তিনি। সেদিনই মৃত্যু হয় গৃহবধূর। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্তদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
সাজা ঘোষণার খবর পেয়ে আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত প্রিয়ার মা মমতা বিশ্বাস। তাঁর কথায়, “মহামান্য আদালতের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমার মেয়ে পরলোকে গিয়েও আজ শান্তি পেল। আদালতের রায়ে আমি খুশি।”
সরকারি কৌঁসুলি সন্দীপ ভট্টাচার্য জানান, মোট ১৪ জন সাক্ষীর বয়ান ও সবদিক খতিয়ে দেখে বিচারক চার অভিযুক্তকেই গৃহবধূ নির্যাতন ও খুনের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন।
বনগাঁ মহকুমা আদালতের আইনজীবী সমীর কুমার ঘোষ বলেন, “একজন আইনজীবী হয়েও রথীন্দ্রনাথ সেন যেভাবে স্ত্রীকে নির্যাতন করে খুন করেছে, তা সমাজের শিক্ষিত মানুষের কাছে লজ্জাজনক। আদালতের এই কঠোর রায় ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বার্তা দেবে।”
রায় ঘোষণার পর এলাকাজুড়ে স্বস্তির হাওয়া। ন্যায়বিচার পেয়ে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারাও।