অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের হাতে কালী প্রতিমা—মাটিতে প্রাণ দিল ১৫ বছরের অরিত
সংবাদদাতা, রাজগঞ্জ:মাত্র ১৫ বছর বয়সেই মাটি দিয়ে দুই ফুট তিন ইঞ্চি উঁচু কালী প্রতিমা বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিল রাজগঞ্জের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অরিত দত্তগুপ্ত। শুধু কালী নয়, তার হাতে প্রাণ পেয়েছে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক; এমনকি সিমেন্ট দিয়ে তৈরি হয়েছে বজরংবলীর মূর্তিও।
অরিত রাজগঞ্জের বেলাকোবা হাই স্কুলের ছাত্র। তার বাবা পিন্টু দত্তগুপ্ত একটি ফ্যাক্টরিতে কর্মরত এবং মা অলী দত্তগুপ্ত একজন গৃহবধূ। একমাত্র সন্তান অরিত ছোট থেকেই মাটির সঙ্গে খেলা করতে ভালোবাসত। কুমোর বাড়ি থেকে মাটি এনে পুতুল তৈরি করত। সেই শখই এখন পরিণত হয়েছে প্রতিমা গড়ার শিল্পে।
অরিত জানায়, ২০২২ সাল থেকে প্রতিমা তৈরি করা শুরু করে। গত বছর প্রথমবার সে মাত্র ৫ ইঞ্চির কালী প্রতিমা বানিয়েছিল। এবছর অনেক বড় পরিসরে, দুই ফুটেরও বেশি উচ্চতার প্রতিমা বানিয়েছে সে, তাও সম্পূর্ণ একার হাতে।
প্রতিমাটি তৈরি করতে সময় লেগেছে মোট ১৫ দিন, যার মধ্যে শেষ ৫ দিন লেগেছে রং করার কাজে। আট রকমের রং সাদা, কালো, নীল, বাদামি, হলুদ, সবুজ, লাল ও গোলাপি ব্যবহার করা হয়েছে প্রতিমায়। অরিত জানায়, সে মূলত শনিবার ও রবিবার বেশি সময় দিতে পেরেছে এই কাজে।
প্রতিমা তৈরিতে মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৩০০ টাকা, যার মধ্যে ছিল রং, কাপড়, গয়না ও অস্ত্রের খরচ। এই সমস্ত খরচই বহন করেছেন তার বাবা-মা।
অরিতের মা অলী বলেন, ছোটবেলা থেকেই ও মাটির পুতুল বানিয়ে আবার ভেঙে ফেলত। সব কিছু ও নিজের মন থেকেই করে। আমরা সব সময় ওকে উৎসাহ দিয়ে এসেছি।
স্কুলের শিক্ষক কৌশিক ঘোষ ও কৃষ্ণপদ কর জানান, অরিত পড়াশোনায় মনোযোগী ও নিয়ম মেনে চলে। পাশাপাশি আঁকতে ভালোবাসে এবং শিল্পকলার প্রতি তার গভীর আগ্রহ রয়েছে।
অরিতের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া। তবে পাশাপাশি এই মৃত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টাও চালিয়ে যেতে চায় সে।